বিদায় বেলার ম্যাচে ম্যাচ সেরা হলেন যিনি

চলতি বছরের কোপা আমেরিকার শেষে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। ফাইনালের আগে আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশনও তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানায়। উপহার দিন, বিশেষ জার্সি। এরপর আর্জেন্টিনার হয়ে প্রায় প্রতিটি ফাইনালেই ‘মিস্টার ফিদেও’ দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন। কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে পরাজিত করে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জিতে ডি মারিয়া ম্যান অফ দ্য ফাইনালের পুরস্কারও পান।

মিয়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়ার ফাইনাল উত্তপ্ত হবে বলে আশা করা হয়েছিল। কলম্বিয়ার উগ্র সমর্থকদের আচরণে উত্তাপ ও​​উত্তেজনা উত্তেজনায় পরিণত হয়। তুলকলাম টিকিট ছাড়া স্টেডিয়ামে লোকদের প্রবেশে বাধা দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে দেয়, এরপর প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ম্যাচ শুরু হয় এবং উভয় দলের সমর্থকরা এদিক ওদিক দৌড়াদৌড়ি করতে থাকে এবং নিরাপত্তাকর্মীরা চরমপন্থীদের ওপর হামলা চালায়। এরপর দুই দলের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচের পর ৯০ মিনিট গোলশূন্য থাকে।

ম্যাচের ১১২তম মিনিটে অচলাবস্থা ভেঙে যায়। মৌসুমের সর্বোচ্চ গোলদাতা লাউতারো মার্টিনেজ বিকল্প হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন। ফাইনালে লিড নেন লাউতারো। চমৎকার শটে অচলাবস্থা ভাঙেন তিনি। মাঝমাঠ থেকে তাকে বল থ্রু করে পাঠান জিওভানি লো সেলসো। বিকল্প মিডফিল্ডারের পাস পেয়েছিলেন মার্টিনেজ। সেখান থেকে শান্তভাবে বল জালে পাঠান লাউতারো মার্টিনেজ। আর এতেই গোলের জন্য আর্জেন্টিনার দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটে এবং কলম্বিয়া ক্রমাগত পরাজয়ের দিকে এগিয়ে যায়। গোল নিজেই নির্ধারণ করেছিল ম্যাচের ফলাফল।

আর্জেন্টিনাকে তাদের রেকর্ড ১৬তম কোপা শিরোপা জয়ের জন্য অভিনন্দন জানাতে ম্যাচের শেষে বড় পর্দায় ডি মারিয়ার নাম দেখা যায়। কারণ তাকে ম্যান অব দ্য ফাইনাল ঘোষণা করা হয়েছে। কোপা আমেরিকার ফাইনালে গোল করতে না পারলেও তিনি ধারাবাহিকভাবে আর্জেন্টিনার আক্রমণে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। আলবিসেলেস্তে অধিনায়ক লিওনেল মেসি ৬৬ মিনিটে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়লে মঞ্চ তৈরি হয়। ফুটবল পণ্ডিতরা সম্ভবত এভাবেই ডি মারিয়ার প্রস্থানকে স্ক্রিপ্ট করেছিলেন।

এই বাঁ-পায়ের জাদুকরের পা থেকে কোনও সাহায্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধ থেকে কলম্বিয়ার রক্ষণভাগে আক্রমণ করে একপ্রান্ত ব্যস্ত রাখে তারা। যার কারণে আর্জেন্টিনা প্রায়ই লিড নেওয়ার সুযোগ পেত। সে কারণেই নাকি বিদায়ী ম্যাচে সাম্প্রতিক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে মাঠে ছিলেন ডি মারিয়া। স্কালোনি অশ্রু-চোখের তারকাকে তুলে নিলে আলবিসেলেস্তেদের জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।

ডি মারিয়া তার বিদায়ী মৌসুমে আর্জেন্টিনার হয়ে ষষ্ঠ বড় শিরোপা জিতেছেন। ২০২২ বিশ্বকাপ, ২০২১ এবং ২০২৪ কোপা আমেরিকা, ২০২২ ফাইনাল, অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ এবং ২০০৮ অলিম্পিকে আর্জেন্টিনার জার্সিতে স্বর্ণপদক জিতেছেন।

Leave a Comment