৭০ টাকা বেতনের ইয়াকুব ঝাড়ুদার থেকে কি করে এখন কোটিপতি

নাম ইয়াকুব,কর্মস্থল সীতাকুণ্ড উপজেলার সাব রেজিস্ট্রির কার্যালয়, পদবি অস্থায়ী ঝাড়ুদার। কয়েক বছর আগে তিনি দৈনিক ৭০ টাকা মজুরিতে অফিস ঝাড়ু দেওয়ার কাজ নেন।এখন ইয়াকুবের রাঙ্গুনিয়ায় এক আলিশান বাড়িআছে। রয়েছে জমি ব্যক্তিগত গাড়ি এছাড়াও সীতাকুন্ড পৌর সদর উপজেলায় বিভিন্ন মৌজায় তার শশুর শাশুড়ি শালিকা এবং নানী শাশুড়ির নামে কিনেসে অনেক জমি জমা। সীতাকুণ্ড উপজেলার আমিরাবাদ মউজায় ৬ শতক জমি কিনেছেন ৮০ লক্ষ টাকায়। দলিল রয়েছে সাকিনা বিবি নামে ৯০ বছর বয়সী এক নারীর নামে সম্পর্কে ইয়াকুবের নানী শাশুড়ি। মহাদেবপুর মৌজায় কেনেন দশ শতক জমি যার বর্তমান মূল্য ৭০ লক্ষ টাকা। এছাড়াও নরালিয়া মৌজায় শাশুড়ির নামে এক একরের অধিক জমি কিনেছেন বলে জানা যায়। 

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোধালা গ্রামের ইউসুফের ছেলে ইয়াকুব। কয়েক বছর আগে ইয়াকুব ছিল সাবরেজিস্টার অফিসের পাশের হোটেলের এক কর্মচারী। এরপরে সে ৭০ টাকা বেতনে সাবরেজিস্টার অফিসে ঝাড়ু দেওয়ার চাকরি নেন। তখন ধীরে ধীরে সাব রেজিস্টারদের আস্থাভাজন হয়ে ওঠে। এরপর কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ইয়াকুব ঘরে তোলে ঘুষ ও বাণিজ্যের বড় সিন্ডিকেট। সকালে রেজিস্ট্রি অফিস ঝাড়ু দিয়ে স্বল্পমজুরি পাওয়ার কথা যার তিনি বনে গেলেন কোটি টাকার মালিক।

এসবের নেপথ্যে রয়েছে সাব রেজিস্টারদের সঙ্গে তার সখ্যতা। জানা গেছে ইয়াকুবের সঙ্গে বনিবনা না হলে কারো জমি রেজিস্ট্রি করা হয় না। অভিযোগ রয়েছে দলিল অনুযায়ী দরদাম করে ঘুষের অংক ঠিক করে ইয়াকুব। এবং ইয়াকুবি টাকা ভাগ করে দেয় সাব রেজিস্ট্রেশন সহ অন্যদের। কমিশনে দলিল রেজিস্ট্রেশন করার ক্ষেত্রে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ আছে ঝাড়ুদার ইয়াকুবের বিরুদ্ধে। ইয়াকুব রেজিস্টারদের আস্থাভাজন হওয়ায় সুবাদে তাকেই কমিশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রতিটি কমিশন রেজিস্ট্রি থেকে তিনি মোটা অংকের ঘুষ নেন। 

ইয়াকুব রেজিস্ট্রি অফিসের ঝাড়ুদার এর আগে ভাতের হোটেলে কাজ করতো। এবং রেজিস্ট্রির কর্মচারীদের জন্য খাবার সরবরাহ করতেন। অফিসের ঝাড়ুদার হিসেবে তা শুরুর পরে হয়ে ওঠেন রেজিস্টারদের প্রিয় পাত্র এবং আস্থাভাজন। ফলে অফিস জুড়ে তিনিও হয়ে ওঠেন ক্ষমতা বান। ইয়াকুব অন্যদিকে হোটেলের মালিক শাহ আলমের দোকানের কর্মচারী থাকার সময়ই তার মেয়ের সঙ্গে প্রেম হয় ইয়াকুবের। অনেক অর্থবিত্তর মালিক হওয়ার পর ওই মেয়ে কি বিয়ে করে ইয়াকুব। 

সীতাকুন্ডু উপজেলার ভূমি অফিসের সাব রেজিস্টার রায়হান হাবিব সাহেব বলেন, আগে যারা সাব রেজিস্টার ছিলেন তারা ইয়াকুব কে কমিশনে পাঠাতেন সেই জন্য আমিও তাকে পাঠাই তার সম্পর্কে এর বেশি কিছু জানা নেই আমার। 
এত ছোট পদে কাজ করে ও এত সম্পদের মালিক হলেন কিভাবে ইয়াকুব কে জিজ্ঞেস করা হলে, 
ইয়াকুব বলেন আমার কোন অবৈধ সম্পদ নেই আমি চাকরি ছেড়ে দেব।

Leave a Comment