ফাঁস হলো চার রেলমন্ত্রীর দুর্নীতি!! কত টাকা আত্মসাৎ করেছে তারা?

রেলপথ মন্ত্রণালয় ১৫ বছরেও কালো বিড়ালমুক্ত হয়নি। এ সময়ে মন্ত্রণালয়টি পাঁচ মন্ত্রীর হাতবদল হয়েছে। প্রতিবারই নেওয়া হয়েছে নতুন প্রকল্প। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়নি। দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে ব্যয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রেলপথ নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় হয় ১ কোটি ৮৮ লাখ ৫০ হাজার থেকে ২ কোটি মার্কিন ডলার।

সেখানে বাংলাদেশে ৭ কোটি ৬৩ লাখ ৭০ হাজার ডলার ব্যয় দেখানো হয়েছে। বাস্তবায়ন হয়েছে ৯৫টি। চলমান ২৯ প্রকল্প। রেলের সম্পত্তি দখল, টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য হয়েছে বেশুমার। প্রায় প্রতিটি খাতেই দুর্নীতি হয়েছে শত শত কোটি টকা। ভাগ গেছে শীর্যপর্যায় থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবার পকেটে। তারা দুর্নীতির টাকায় আরও ফুলেফেঁপে উঠেছেন।

গতো পনেরো বছোরে রেল মন্তোরলায় একের পর এক সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, মো. মুজিবুল হক, মো. নূরুল ইসলাম সুজন ও মো. জিল্লুল হাকিম। তাদের দুর্নীতি ও লুটপাটের তথ্য ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে। ৫ মন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করা রেলের সাবেক সচিব, ডিজি, প্রকল্প পরিচালক ও সংশ্লিষ্টদের দুর্নীতির তথ্যও গোপন থাকছে না।

পাঁচ মন্ত্রীর একজন নূরুল ইসলাম সুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে সোমবার। বাকি তিনজন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ চারজনই এখন নিশানায় আছেন। বাকি একজন মারা গেছেন। তাদের খুঁজছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও। রেলের সর্বশেষ মন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিমের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে দুদকে। মামলা আছে ওবায়দুল কাদের ও মুজিবুল হকের নামেও।

সচিব, ডিজি, প্রকল্প পরিচালকসহ বড় বড় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এর সঙ্গে জড়িয়েছে। যারা বিভিন্ন ধাপে কমিশন আদায় থেকে শুরু করে অর্থ ভাগবাঁটোয়ারার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল বাকী যুগান্তরকে বলেন, রেলের ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এসব প্রকল্প নিয়ে নানান অভিযোগ রয়েছে। প্রকল্প ঘিরে অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত বেরিয়ে আসছে। অনেক প্রকল্প নির্দিষ্ট ব্যক্তির নির্দেশনায় গ্রহণ ও বাস্তবায়ন হয়েছে। প্রাথমিক সমীক্ষাও করা হয়নি। আমরা একাধিকবার বৈঠক করেছি। অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত মন্ত্রী, সচিব কিংবা যে কেউ জড়িত থাকুক-সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতির মাধ্যমে সময় ও ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লোটপাটের সঙ্গে সম্পৃক্ত কেউ রক্ষা পাবে না।

রেলওয়ে উপদেষ্টার বক্তব্য : রেলওয়ে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান যুগান্তরকে বলেন, রেলে ভয়ানক অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য-উপাত্তসহ অভিযোগ রয়েছে। আমরা এসব খতিয়ে দেখছি। রেলে উন্নয়নের নামে যে অনিয়ম-দূর্নীতি হয়েছে তা দুদক নিশ্চয়ই দেখছে। যতটুকু জানি দুদকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।

আমাদের কাছেও দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত আসছে। আমরা এসব দুদককে দিয়ে সহায়তা করব। রেলে যাতে এমন অনিয়ম-দুর্নীতি এবং গুরুত্বহীন প্রকল্প গ্রহণ না হয়, তা নিয়ে আমরা কাজ করছি। সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনা হচ্ছে। প্রকল্প ঘিরে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। কেউ বাঁচতে পারবে না। আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছি।

Leave a Comment