লুকিয়ে থাকা ছাত্রলীগের ৩ নেতা, পরীক্ষা দিতে এসে শিক্ষার্ধীদের তোপের মুখে।

শিক্ষার্থী নির্যাতন,জুলুম এবং বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জরিত থাকার অভিযোগে সাধারন শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পরে ছাত্রলিগের তিন নেতা। টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নিতে ক্যাম্পাসে আসলে তারা তোপের মুখে পড়ে।

তোপের মুখে পড়া ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হলেন- বাকরবী শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তাইফুর রহমান, রিয়াদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের সভাপতি প্রার্থী রহিমুল ইসলাম শুভ, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের সাবেক উপ-পুস্তক ও প্রকাশনা সম্পাদক ওয়াসি-উজান জামান। সোহাগ ও বেগম রোকেয়া হল। ছাত্রলীগ কর্মী তানজিলা মোবাশ্বের স্বর্ণালী।

আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ভেটেরিনারি অনুষদের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে ঘেরাও করে।একাধিক সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগের এই ৩ নেতা-কর্মী ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, সকাল ১১টার দিকে ছাত্রলীগের সোহাগ পরীক্ষা দিতে এলে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করেন। পরে নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের কাছে তাকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়।

তখন সোহাগ ক্ষমা চাইলে শিক্ষার্থীরা তাকে ছেরে দ্যায় এবং পরিখ্যা দিতে হলে প্রবেস করায়। তবে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন পরীক্ষা শেষে দুপুর ১২টার দিকে রাহিমুল ইসলাম শুভ ও মাসহ তানজিলা মোবাশ্বেরা স্বর্ণালী ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. পূর্বা ইসলামের কক্ষে আশ্রয় নেন এবং দরজা আটকে দেন।

সে সময় অধ্যাপক পূর্বা রুমে ছিলেন না। শিক্ষার্থীরা কক্ষের বাইরে অবস্থান নেন এবং শুভকে বের হতে বলেন। তিনি বের না হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা এবং প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত হন এবং পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।

শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ছাত্রলিগ নেতা শুভকে তার কৃতকর্মের শাস্তি পেতেই হবে এবং ছাত্রলীগের কেউ, ক্লাস বা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। আগে তাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র হবে যারা নির্দোষ প্রমাণিত হবে তারাই ক্লাস পরীক্ষার অংশ নিতে পারবে । বাকিদের শাস্তি পেতে হবে।

পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে শিবুকে প্রটেক্ট করে গাড়িতে করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং গাড়িতে ওঠার সময় উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করেন। তবে স্বর্ণালী ও তার মাকে সে সময় ছেড়ে দেওয়া হয়।

শুভর বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা জানান, তিনি শিবির বা ছাত্রদল ট্যাগ দিয়ে শিক্ষার্থীদের বের করে দিতেন। একাধিক শিক্ষার্থীকে হয়রানি এবং জুলুমের কারণে হলের শিক্ষার্থীরা তার ওপর ক্ষুব্ধ।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের শিক্ষার্থীরা সোহাগের বিষয়ে বলেন, সে কিভাবে নির্যাতন করেছে হলের সকলেই জানে। আমরা তাকে কিছুই বলিনি, শুধু মাফ চাওয়ানো হয়েছে। তাকে বুঝানো হয়েছে ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়।

এছাড়া, রোকেয়া হলে একক আধিপত্য এবং শিক্ষার্থীদের হয়রানি করার জন্য স্বর্ণালীর ওপার ওই হলে শিক্ষার্থীদের প্রচন্ড খুব ছিল বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবদুল আলীম বলেন,,
প্রক্টর হিসেবে সকল শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমার দায়িত্ব। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক কাজে এসেছিল। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী নির্যাতনসহ নানা অভিযোগ থাকায় শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর ক্ষুব্ধ। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে আমরা তাদের ক্যাম্পাসের বাইরে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিতে সক্ষম হই।

Leave a Comment