কর্মবিরতিতে স্থবির ৩৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়: ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক আজ

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিলের দাবিতে দেশের ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তৃতীয় দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন। এই সংকট সমাধানের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আন্দোলনরত শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।

বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের মূল ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া জানান, ওবায়দুল কাদের শিক্ষকদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা শুনতে আগ্রহী এবং তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য সময় নির্ধারণ করেছেন। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।

তিন দিনের কর্মবিরতির ফলে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা বিভাগ, হল, ইনস্টিটিউট ও প্রশাসনিক ভবনের কোথাও কোনো সেবা পাচ্ছেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কলা ভবনের মূল ফটকে অবস্থান নিলে, কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। অনেক শিক্ষার্থী সেবা নিতে এসে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

নিজামুল হক ভূঁইয়া জানান, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না তাকে ফোন করে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আলোচনা করার পরামর্শ দেন। ওবায়দুল কাদের তাদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা শুনতে এবং বিষয়টি সমাধানে আলোচনার জন্য সন্ধ্যায় দেখা করার প্রস্তাব দেন। তবে কম সংখ্যক প্রতিনিধি নিয়ে আসার অনুরোধ জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনকে ‘অযৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেছেন। এ বিষয়ে নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘যারা প্রত্যয় স্কিম করেছেন, তারা হয়তো মন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়েছেন। আমরা যখন তাকে আমাদের যৌক্তিকতা বোঝাতে পারব, তখন হয়তো তিনি আমাদের সঙ্গে একমত হবেন।’

আলোচনার বিষয়ে শিক্ষক নেতারা জানান, তারা আশা করছেন যে বৃহস্পতিবার সকালে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আলোচনা করতে পারবেন। এছাড়াও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও তাদের বৈঠকের কথা রয়েছে।

অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো পরিষ্কার: প্রত্যয় স্কিম বাতিল, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন। এই দাবিগুলো মেনে না নেওয়া হলে আমরা লাগাতার কর্মবিরতি চালিয়ে যাব।’

এই আন্দোলন ও পরবর্তী বৈঠকের ফলাফল কী হবে, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে। তবে শিক্ষকদের এই দৃঢ় অবস্থান পরিস্থিতি কতটা বদলাতে পারে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Leave a Comment